বাংলাদেশের জাতীয় অর্থনীতিতে তাঁত শিল্পের ভূমিকা অপরিসীম। হস্ত চালিত তাঁতে বছরে প্রায় ৭০ কোটি মিটার বস্ত্র উৎপাদিত হয় যা অভ্যন্তরীণ চাহিদার প্রায় ৪০ ভাগ মিটিয়ে থাকে। এ শিল্প থেকে মূল্য সংযোজন করের পরিমাণ প্রায় ১৫০০.০০ কোটি টাকা। বাংলাদেশের হস্ত চালিত তাঁত শিল্প এদেশের সর্ববৃহৎ কুটির শিল্প। সরকার কর্তৃক সম্পাদিত তাঁত শুমারী ২০০৩ অনুযায়ী দেশে বর্তমানে ৫ লক্ষাধিক হস্তচালিত তাঁত রয়েছে ।। দেশের মোট কাপড়ের চাহিদার শতকরা প্রায় ৭৫ ভাগ যোগান দিচ্ছে তাঁত শিল্প এবং প্রায় ৫০ লাখ লোক সরাসরি এই শিল্পের সাথে জড়িত রয়েছে । শুধুমাত্র মনিপুরীরা ২০০৯ সালে ২২ লাখ টাকার যুক্তরাজ্যে তাদের রপ্তানি শুরু করে এবং ২০১০ সালে এর পরিমাণ দাঁড়ায় ৩১ লাখ টাকায়। ২০১২ সালে প্রায় অর্ধ কোটি টাকার মণিপুরী কাপড় যুক্তরাজ্যে রপ্তানি করা হয়েছে ।
কালে কালে পোশাকের রকম-ধরনে নানা পরিবর্তন এসেছে। নিছক তর্কের খাতিরে নয়, চিন্তা বা মননের দিক থেকে এখনও ‘সভ্যতা’ এবং ‘পোশাক’ দুটোই আলাদা দুটি বিষয়। কিন্তু বাংলাদেশের সভ্যতায় এই দুটো বিষয়ই যেন একই সূত্রে গাঁথা। আমাদের দেশে পোশাক ছাড়া সভ্যতাকে কোনোভাবেই কল্পনা করা যায় না। আর পোশাক নিয়েই কাজ করে চলেছে বাংলাদেশের তাঁতিরা। বাস্তবতা হলো অসংখ্য সমস্যায় জর্জরিত থাকার পরেও আমাদের ঐতিহ্য, কৃষ্টি ও সংস্কৃতি নিয়েই দেশের বিভিন্ন জেলার তাঁতশিল্পের দক্ষ কারিগররা তাদের বংশ পরম্পরায় তাঁতের নানা ধরনের কাপড় তৈরি করে চলেছেন। স্যালুট, তাঁতশিল্পের এই শিল্পীদের। আর তাঁত এবং তাঁতিদের সঙ্গে নিয়েই কাজ করে ‘তাঁতশিল্প’।